thecitybank.com
banglarkatha62@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ৬ই জুন ২০২৫, ২৩শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলায় লিচুর বাম্পার ফলন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত:
৫ জুন ২০২৩, ০১:১৫

নিজস্ব

ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিক্যাল কলেজের কর্মরত চিকিৎসক বিজয় পালও ঘুরে এসেছেন লিচু বাগান থেকে। ফেসবুকে তিনিও বাগানে ঘুরে আসার বেশ কিছু ছবি দিয়েছেন। একটি ছবির ক্যাপশানে লিখেছেন, ‘লিচু খেতে খেতে টায়ার্ড’। চিকিৎসকদের একটি বড় দলকেও দেখা যায় লিচু বাগান ঘুরে আসার ছবি ফেসবুকে দিয়েছেন।


লিচুর দেশে বিজয়নগর উপজেলা’ লিখে ছবি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা মাসুকুল কবীর। ‘আজ সারাদিন লিচু বাগানে’ লিখে ফেসবুকে ছবি দেন নারী নেত্রী ফারহানা মিল
মোদ্দাকথায়, লিচুর রাজ্যে যেন সিপাহী উতলা। ফেসবুক খুলতেই চোখে পড়ছে লিচু বাগানের ছবি।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ নেতা রেদওয়ান আসলাম, ফেসবুক লিখেন লুচির দেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলা

হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন ছুটে যাচ্ছেন লিচুর রাজ্য হিসেবে খ্যাত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায়। এছাড়া জেলার আখাউড়া ও কসবা উপজেলাতেও অনেকে লিচু বাগানে ছুটে চলছেন। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে বাজারে তুলনামূলক বিক্রি কম। যারাই বাগানে যাচ্ছেন তারা সেখান থেকে কিনে নিয়ে আসছেন।


কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এ জেলায় ৫৬৭ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ করা হয়েছে।

একেক হেক্টরে গড়ে লিচু গাছের সংখ্যা ৯০টি। একেকটি গাছে লিচু ধরবে গড়ে দুই হাজার পাঁচশটি। এ বছর জেলাতে প্রায় ২৪ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকার লিচু বিক্রির ধারণা করা হচ্ছে।

বিজয়নগরের ব্যবসায়ীরা জানান, বাগানগুলোতে দেশি জাতীয় লিচু প্রতি হাজার দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা, এলাচি ও চায়না লিচু দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা, পাটনাই ও বোম্বাই লিচু দুই হাজার ২০০ থেকে ২৫০০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার আউলিয়া বাজারে সবচেয়ে বেশি লিচু বিক্রি হয়। সেখানে ভোর ৪টা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত প্রতিদিন ৩০-৪০ লাখ টাকার লিচু বিক্রি হয়।

উপজেলার পাহাড়পুর, বিষ্ণুপুর, কাঞ্চনপুর, খাটিঙ্গা, কাশিমপুর, সিঙ্গারবিল, চম্পকনগর, আদমপুর, কালাছড়া, মেরাসানি, সেজামুড়া, কামালমোড়া, নুরপুর, হরষপুর, মুকুন্দপুর, নোয়াগাঁও, অলিপুর, চান্দপুর, কাশিনগর, ছতুরপুর, রূপা, শান্তামোড়া, কামালপুর, কচুয়ামোড়া, ভিটিদাউপুর এলাকায় লিচু বাগান রয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি লিচু গাছ রয়েছে।

লিচুর ভালো ফলনে এবার কৃষকরা খুশি। সাধারন মানুষের পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নরসিংদী, ভৈরব, নোয়াখালী, চাদপুর, মৌলভীবাজার, সিলেট, শ্রীমঙ্গল, হবিগঞ্জ, ফেনী ও রাজধানী ঢাকার ব্যবসায়ীরা এখান থেকে এসে লিচু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন ভোর থেকে শুরু হয়ে দিনভর বাগানেই লিচু বিক্রি হয়।

বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের লিচু চাষী মাসুদ হাসান বিডি২৪ লাইভকে জানান, তার ৬০টা গাছে লিচুর চাষ করা হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় এবার ১০-১২ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করা যাবে। গত বছর আট লাখ টাকার লিচু বিক্রি করা হয়। এবার বাগান থেকে অনেকেই ছুটে আসছেন। শুক্র ও শনিবার লোকজন বেশি আসে বলে বাগানে অতিরিক্ত পাহারাদার রাখতে হয় দেখভালের জন্য।

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা থেকে লিচু নিতে আসা মানিক মিয়া জানান, তিনি প্রতিদিন এক লাখ টাকার মতো লিচু কিনে নিয়ে যান। কসবার ব্যবসায়ী কালু হোসেন জানান, এখানকার লিচু স্বাদে অনন্য। যে কারণে চাহিদা অনেক বেশি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার বাসিন্দা ইলিয়াস হোসেন জানান, বন্ধুদের নিয়ে বাগানে এসেছেন। বাগান থেকে লিচু কেনার মজাই আলাদা। গাছ থেকে নিজ হাতে পেড়ে খাওয়াটাও অন্যরকম অনুভূতির বিষয়। পাহাড়ি এলাকা হওয়াতে পরিবেশটাও বেশ ভালো লাগে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মুনসী তোফায়েল হোসেন বিডি২৪ লাইভকে জানান, ভালো ফলনের জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়। যে কারণে প্রতিবছরই লিচু চাষে আগ্রহ বাড়ছে। এ বছর জেলায় লিচুর ফলন ভালো হয়েছে।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর